কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা কি
কাঁচা পেঁপে শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি, পাইলস ডায়রিয়া ত্বকের সমস্যা সহ শরীরের অনেক সমস্যা দূর করে থাকে।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতাঃ
কাঁচা পেঁপের আছে অসাধারণ কিছু গুন। শরীর সুস্থ রাখতে ও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে কাঁচা পেঁপে অসাধারণ কাজ করে থাকে।গবেষণায় বলেন মানুষের ভেতরের সৌন্দর্যের যত্ন নিলে তা নিজে নিজেই বাইরের সৌন্দর্য হিসেবে ফুটে ওঠে। মানুষের শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে পারে এই কাঁচা পেঁপে। এজন্যই এই কাঁচা পেঁপে সুপার ফুড নামে পরিচিত।
অনেকেই পেঁপের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে থাকেন। কাঁচা পেঁপেতে নানা রকম প্রাকৃতিক এনজাইম থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি এনজাইম হচ্ছে সাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন।এই দুটি এনজাইম প্রোটিন চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে ।
পেট পরিষ্কারক হিসেবে অনেকেই কাঁচা পেঁপে খেয়ে থাকেন। এটা অনেকটাই ঝাটার মতো কাজ করে। কাঁচা পেঁপে খেলে কোলন বা মলাশয় ও পরিপাকনালীর যত পুরনো নোংরা আছে সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে যায়।
কাঁচা পেঁপেতে থাকা আশ ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য এসিডিটি বা পাইলস ও ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে। মানুষের শরীরভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে এই কাঁচা পেঁপে দারুন ভাবে কাজ করে থাকে।
নিউট্রিশন নামক ব্রিটিশ জার্নাল প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে অনেক বেশি ক্যারোটিনয়েড। যা গাজর ও টমেটোর থেকে অধিক কাজ করে থাকে। মানুষের শরীরের জন্য কাঁচা পেঁপেতে থাকা ক্যারোটিনয়েড বেশি উপযোগী।
ত্বকের সুরক্ষায় পেঁপের আঁশ শরীরের ভেতরের বিষাক্ত ভাব দূর করে থাকে এবং নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে ত্বকের নানারকম সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে। বিশেষ করে ব্রণ এবং ত্বকের উপর কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে পারে এই কাঁচা পেঁপে।
কাঁচা পেঁপে যেভাবে খাওয়া উচিত শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত কাঁচা পেঁপের জুস খেতে পারেন। শসা মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর এর ভিতর একটু লেবু চিপে দিয়ে খেয়ে নিতে পারেন এছাড়াও তরকারি হিসেবে কাঁচা পেঁপে খাওয়া যেতে পারে।
নিচে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
১।হৃদ রোগ প্রতিরোধে দারুন কার্যকরী কাঁচা পেঁপে। সকালে ভর্তা করে খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। ফলে হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্টোকের ঝুঁকি কমে।
২। এতে বিদ্যমান আন্টি অ্যামোবিক ও অ্যান্টি প্যারাসিটিক উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৩। পেটে অতিরিক্ত কৃমির সংক্রমণ দেখা দিলে পেঁপের রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।
৪।কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী।
৫।যাদের মুখে মেছতা ব্রণ জনিত কালো দাগ রয়েছে তারা কাঁচা পেঁপে ব্লেন্ড করে মুখে লাগিয়ে নিতে পারেন এতে করে খুব ভালো উপকার পেয়ে থাকবেন।
৬। রেটিনার ক্ষতি হলে মানুষ চোখে কম দেখে প্রতিদিন কাঁচা পেঁপে খেলে চোখের জ্যোতি বাড়ে।
৭। বহু নারী অনিয়মিত মাসিকের ব্যথায় ভুগে থাকে । এমতাবস্থায় কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন।
৮।ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই কাঁচা পেঁপে। কারণ এটি পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
৯।কাঁচা পেঁপে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
১০। চুলে মাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও চুল ঝলমলে হয়।
কাঁচা পেঁপে বহু রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত। স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকায় কাঁচা পেঁপের অবস্থান অন্যতম। কাঁচা পেঁপে কাঁচা থাকা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এবং পাকা থাকা অবস্থায় ফল হিসেবে খাওয়া হয়। এটি দুই ভাবেই খাওয়া যায় আর এই ফল সারা বছরই আবাদ করা যায়। এবং সারা বছরই পাওয়া যায়।
পেঁপে নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কারণ পেঁপের মধ্যে থাকে ভিটামিন সি কোষ্ঠকাঠিন্য এবং হজম শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়াও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই কাঁচা পেঁপে খাওয়া খুবই উপকারী।
কাঁচা পেঁপে গ্যাস্টিক জ্বর নিরাময় পেটের সমস্যা ও বদ হজমেও অনেক উপকার করে থাকে। কাঁচা পেঁপে ডায়েটারি ফাইবারের সমৃদ্ধ। ফলে অন্তর থাকে সুস্থ সবল।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কাঁচা পেঁপে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। কাঁচা পেঁপে দেহের উচ্চ রক্তচাপ সরবরাহে কাজ করে থাকে। দেহে জমে থাকা সোডিয়াম দূর করে থাকে। যা হৃদপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী।
কাঁচা পেঁপের বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করে। এছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে কাঁচা পাতার রস খাওয়ানো উচিত। এটা শ্বেত রক্তকণিকার প্লাটিলেট সংখ্যা বাড়াতে সহায়তা করে।
সুতরাং কাঁচা পেঁপের গুরুত্ব অপরিসীম এটি আমাদের শরীরের নানা ধরনের রোগ নিরাময় করে থাকে তাই আমাদের প্রতিদিন কাঁচা পেঁপে খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url