আমের উপকারিতা কি
আমের উপকারিতাঃ
আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং কার্বোহাইড্রেট। আম আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে। আমে রয়েছে ভিটা্মিন এ এবং মিনারেল। এছাড়াও ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম ইত্যাদি। আম আমাদের শরীরের স্বাস্থ্য বাড়াতেও সহায়তা করে। আমে অন্যান্য উপাদানের থেকে কার্বোহাইড্রেট অনেক বেশি পরিমাণ থাকে।
আমরা যদি ১০০ গ্রাম আম খেয়ে থাকি তাহলে কার্বোহাইড্রেট এর পুষ্টি পেতে পরি । যার ফলে আমাদের সারাদিনের ক্লান্তি দূর হওয়া সম্ভব। এমনকি ব্রেন সুস্থ রাখতে ও সহায়তা করে। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ।আমরা জানি ভিটামিন এ আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া আমাদের প্রয়োজন।
ভিটামিন এ এর আরেকটি কাজ হল ত্বককে সতেজ রাখা। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে কাজ করে থাকে। আম খেলে ত্বকের খসখসা ভাব থাকে না। ত্বক থাকে সুন্দর ও মসৃণ। আবার আমে রয়েছে ভিটামিন সি এর কাজ হল ইনফেকশন দূর করা।
এছাড়াও এরা আরবিসি গঠনে সাহায্য করে। আরবিসি গঠনে সাহায্য করা মানে হলো হিমোগ্লোবিনকে মজবুত করে রাখা। আর হিমোগ্লোবিন সঠিক পরিমাণে থাকা মানে হচ্ছে রক্তস্বল্পতা দূর করা। এমনকি ভিটামিন সি এর অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়। দাঁত থেকে রক্ত পড়ে।
এজন্য আম খেলে আপনার ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়ে থাকে। যার ফলে মাড়ি মজবুত হবে এবংদাত দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হবে।
আমে আছে ভিটামিন ই, ভিটামিন ই এর কাজ হল মানুষের শরীরের যে কোষ রয়েছে সেই কোষকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন ই তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় কোষকে ড্যামেজ করা থেকে রক্ষা করে। কারণ মানুষের শরীরের কোষ যত দ্রুত ড্যামেজ হবে মানুষের শরীরের চামড়া তত দ্রুতঝুলে পড়বে।
এজন্য আপনি যদি বয়স কমাতে চান, তাহলে আম বেশি পরিমাণে খেতে হবে। এছাড়াও আ্মে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। আমরা জানি, ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের হাড় মজবুত করে। এজন্য ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করতে আম খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম।
পটাশিয়াম এর কাজ হল মাংসপেশিকে সুস্থ রাখা। আম আমাদের পটাশিয়াম এর অভাব দূর করবে। যার ফলে আমাদের মাংসপেশী সতেজ থাকে। এছাড়াও আমে আরেকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। সেটি হল গ্লূটামিন এসিড।যেটি ব্রেনকে সতেজ রাখে। মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।
আমাদের সজীব সতেজ রাখার জন্য আম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।সুতরাং আমের সিজনে বেশি করে আম খাওয়া উচিত। তাই আমাদের শরীর সুস্থ সবল রাখার কাজে আম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
নিচে এর কিছুগুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
১। আম আমাদের ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে এবং ত্বকের খসখসা ভাব দূর করে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
২। আমে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের ঘুমকে ত্বরান্বিত করে এবং শরীরের ক্লান্তি দূর করে। অনিদ্রা থেকে দূরে রাখে।
৩। আমে রয়েছে ভিটামিন এ। যা আমাদের চোখের জন্য খুবই উপকারী। যারা চোখে ঝাপসা দেখে এবং রাতের বেলায় কম দেখে তাদের জন্য আম একটি উপকারী উপাদান।
৪। আমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা স্তন ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।।
৫।আম হজমের সমস্যা দূর করে হজম শক্তি বাড়ায়।
৬।রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৭।কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৮। আম স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতায় ভূমিকা পালন করে।
৯।ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
১০। বিটা ক্যারোটিন থাকায় হৃদপিন্ডের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
আম খেলে মনে ভালোবাসার আবির্ভূত হয় তাই আমকে ফুড অফ লাভ বলা হয়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যা আমাদের রক্তস্বল্পতা সমস্যা দূর করে থাকে। আম শুধু স্বাদই নয় গুণেও অনন্য।
গরম থেকে বাঁচতে
প্রখর তাপের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এই আম। আম হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। দেহে রাসায়নিক ক্লোরাইড ও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতেও সহায়তা করে।
পেটের সমস্যা কমাতে
এসিডিটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদ হজমের সমস্যা কমাতে বেশ উপকারী। গ্রামীণ এলাকায় মানুষেরা এসিডিটির সমস্যা কমাতে এই আম চিবিয়ে খেয়ে থাকে।
এটি শ্বাসকষ্ট অম্লতা বৃদ্ধি করে এবং ক্ষয়ও বৃদ্ধি করে থাকে। আম বহু গুণের ভান্ডার তাই একে ফলের রাজা বলা হয়।
আম খেলে ক্ষুধা কমে যায় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন হয়। আমে লেপটিন নামক রাসায়নিক থাকে যা ক্ষুধা কমায়।
আম ইনসুলিনের উৎপাদন বাড়ায়। যার ফলে অতিরিক্ত চর্বি নিজে নিজেই শক্তিতে প্রভাবিত হয়।
হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে আম খেলে। আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় যা আমাদের হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
শরীরে পানির অভাব পূরণ করে আম। আম খেলে আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ঘাটতি পূরণ হয়। শরীর পানি শূন্য হয় না এবং এই গ্রীস্মের মৌসুমে আমাদের শরীর সানস্ট্রোকের সমস্যা থেকে মুক্তি পায়। আম আমাদের শরীরে শীতলতা নিয়ে আসে
আমে পাওয়া যায় টারটারিক এসিড সাইট্রিক এসিড। যা শরীরে ক্ষার ধরে রাখতে সহায়তা করে। আমের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিহত করতে সাহায্য করে। যারা অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা এই গরমে প্রতিদিন একটা করে আম খেতে পারেন। এতে করে শরীরের শক্তি যোগান দিবে ।
উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ফাইবার ও প্যাকটিন থাকায় রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে।এছাড়াও ত্বককে ডিটক্সিফাই করে।
ফরমালিনযুক্ত আম আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই ফরমালিনযুক্ত আম খাওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আজকালকার বাজারে বেশিরভাগ ফরমালিন যুক্ত ফলই বেশি থাকে।এজন্য আমাদের বাজার থেকে যেকোন ফলই কিনে নিয়ে আসার পর আধঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা উচিত। যার ফলে ৯৫ ভাগ ফরমালিন দূর হয়ে যাবে। আমে রয়েছে ম্যালিক এসিড। এটি শরীরে অ্যালকালি নামের রাসায়নিক ভারসাম্য বজায় রাখে।
সুতরাং আমের মৌসুম থাকতেই সবাইকে বেশি করে আম খাওয়া উচিত।আম প্রোটিন উপাদান গুলোকে সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এতে খাবার হজম হয় দ্রুত বাঁচা যায়। পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সুতরাং সবশেষে বলা যায় আমের উপকারিতা অপরিসীম।আম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকার। এটি অনেক সমস্যা থেকে আমাদের দূরে রাখে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url